নিরূপমাদের একটি বইয়ের দোকান আছে, নামঃ নিরূপমা ষ্টেশনারি। বানান ভুল নিয়ে কখনো আমার মাথা ব্যথা ছিলনা। কিন্তু নিরূপমার মত এত শীতল সুন্দর নামের পাশে 'স্টেশনারি'র জায়গায় 'ষ্টেশনারি' থাকবে এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
নিরূপমার বাবা অর্থাত্ দোকানের মালিক কিছুতেই আমার যুক্তিসংগত অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না। অবশেষে একদিন স্বয়ং নিরূপমার উপস্থিতিতে পুনরায় অভিযোগ দাখিল করলামঃ 'চাচা এমন সুন্দর একটি নামের পাশে ভুল-ভাল বানান মানায় না।' নিরূপমা ক্ষণিক ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আবার নোট খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
মাস দুএক নিরূপমা ষ্টেশনারির সামনে দিয়ে যাওয়া হয়নি। কেন যাওয়া হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তর ব্যস্ততা। অদ্ভুদ ব্যপার হল জগতে বেকার ছেলেদেরই ব্যস্ততা বেশি থাকে। কি ধরনের ব্যস্ততা? এমন প্রশ্নে বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়তে হয়। যাইহোক, নিরূপমা ষ্টেশনারি বদলে নিরূপমা স্টেশনারী হয়েছে। দোকানের এক কর্মচারী ডেকে হাতে একটি চিরকুট দিলো। চিরকুটে নিরূপমার নিপূন হাতের লেখায় তাদের বাড়ীর ঠিকানা লেখা। ঠিকানার নিচে লেখাঃ 'চা খাওয়ার আমন্ত্রণ রইল, অবশ্যই আসবেন'।
বাড়ীর নাম চিত্রলেখা। চিত্রলেখার ভেতর সবকিছু বেশ গোছালো। অগোছানো শুধু ফুলদানিটা। ওটার গায়ে আঁকা চিত্রের অংশ বসার ঘরের উল্টোদিকে ফেরানো। আমি ওটা ঠিকদিকে না ফিরিয়ে নিজে রান্না ঘরের দিকে ফিরলাম। এত উত্কণ্ঠা কি চায়ের জন্য না নিরূপমার জন্য?
- আপনি সবার ভুল সুধরে বেড়ান?
- জ্বি না। তবে সুন্দরের পাশে অসুন্দর কিংবা বেমানান কিছু দেখতে পারিনা।
- কিন্তু অসুন্দরকে কি অস্বীকার করতে পারবেন?
- জ্বি না।
- অসুন্দর না থাকলে পৃথিবীতে সুন্দরের দাম-প্রাধান্য কিছু থাকত না।
- অসুন্দরের ছায়া সুন্দরের উপর পড়তে দেয়া ঠিক না।
- ব্যপারটা আপেক্ষিক। চাইলে সুন্দর মনের ছায়ায় একটি অসুন্দর মনকে এনে তাকেও সুন্দর করা যায়।
- হয়তো পৃথিবীর সব সুন্দরের জন্ম হয়েছে অসুন্দরদের সুন্দর করার জন্য।
চিত্রলেখার বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। আমি ঝড়-বৃষ্টির মাঝে বেরিয়ে পড়লাম। যত এগুচ্ছি তত আড়াল হয়ে যাচ্ছে নিরূপমা। বৃষ্টি আমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে, শুধু সমাজসৃষ্ট ভবঘুরে, বেকার, চাল-চুলোহীন অসুন্দরগুলো ধুয়ে দিচ্ছে না।
প্রকৃতি আমাকে সব দিয়েছে শুধু হাতের মুঠোয় একজন নিরূপমার হাত রাখার অধিকারটুকু দেয়নি।
নিরূপমার বাবা অর্থাত্ দোকানের মালিক কিছুতেই আমার যুক্তিসংগত অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না। অবশেষে একদিন স্বয়ং নিরূপমার উপস্থিতিতে পুনরায় অভিযোগ দাখিল করলামঃ 'চাচা এমন সুন্দর একটি নামের পাশে ভুল-ভাল বানান মানায় না।' নিরূপমা ক্ষণিক ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আবার নোট খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
মাস দুএক নিরূপমা ষ্টেশনারির সামনে দিয়ে যাওয়া হয়নি। কেন যাওয়া হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তর ব্যস্ততা। অদ্ভুদ ব্যপার হল জগতে বেকার ছেলেদেরই ব্যস্ততা বেশি থাকে। কি ধরনের ব্যস্ততা? এমন প্রশ্নে বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়তে হয়। যাইহোক, নিরূপমা ষ্টেশনারি বদলে নিরূপমা স্টেশনারী হয়েছে। দোকানের এক কর্মচারী ডেকে হাতে একটি চিরকুট দিলো। চিরকুটে নিরূপমার নিপূন হাতের লেখায় তাদের বাড়ীর ঠিকানা লেখা। ঠিকানার নিচে লেখাঃ 'চা খাওয়ার আমন্ত্রণ রইল, অবশ্যই আসবেন'।
বাড়ীর নাম চিত্রলেখা। চিত্রলেখার ভেতর সবকিছু বেশ গোছালো। অগোছানো শুধু ফুলদানিটা। ওটার গায়ে আঁকা চিত্রের অংশ বসার ঘরের উল্টোদিকে ফেরানো। আমি ওটা ঠিকদিকে না ফিরিয়ে নিজে রান্না ঘরের দিকে ফিরলাম। এত উত্কণ্ঠা কি চায়ের জন্য না নিরূপমার জন্য?
- আপনি সবার ভুল সুধরে বেড়ান?
- জ্বি না। তবে সুন্দরের পাশে অসুন্দর কিংবা বেমানান কিছু দেখতে পারিনা।
- কিন্তু অসুন্দরকে কি অস্বীকার করতে পারবেন?
- জ্বি না।
- অসুন্দর না থাকলে পৃথিবীতে সুন্দরের দাম-প্রাধান্য কিছু থাকত না।
- অসুন্দরের ছায়া সুন্দরের উপর পড়তে দেয়া ঠিক না।
- ব্যপারটা আপেক্ষিক। চাইলে সুন্দর মনের ছায়ায় একটি অসুন্দর মনকে এনে তাকেও সুন্দর করা যায়।
- হয়তো পৃথিবীর সব সুন্দরের জন্ম হয়েছে অসুন্দরদের সুন্দর করার জন্য।
চিত্রলেখার বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। আমি ঝড়-বৃষ্টির মাঝে বেরিয়ে পড়লাম। যত এগুচ্ছি তত আড়াল হয়ে যাচ্ছে নিরূপমা। বৃষ্টি আমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে, শুধু সমাজসৃষ্ট ভবঘুরে, বেকার, চাল-চুলোহীন অসুন্দরগুলো ধুয়ে দিচ্ছে না।
প্রকৃতি আমাকে সব দিয়েছে শুধু হাতের মুঠোয় একজন নিরূপমার হাত রাখার অধিকারটুকু দেয়নি।